ঘরকুনো বাঙালি বলে আমাদের কিন্তু এক ভয়ঙ্কর দুর্নাম আছে। সেই দুর্নাম ঘুচাতেই যেন আজকাল বেশ ট্রাভেলিংয়ের ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। ট্রেন্ড ফলো করতে চান কিংবা প্রকৃতির সাথে মিশে যেতে চান, ঘুরাঘুরি করতে চাইলে কিন্তু দেশের দক্ষিণভাগ মানে চট্টগ্রাম বিভাগের বিকল্প খুব বেশি পাবেন না। আমিও পাই না! তাই বান্দরবন, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ফিরে যেতে হয় বারবার! পাহাড়, সবুজ বন, ঝর্ণা, ঝিরিপথ, টিলা, লেক, নিরবিচ্ছিন্ন পাখির ডাক আর শহর বর্জিত পরিবেশ, এই সব এক সাথে পেতে চাইলে আসলে সবাইকেই সেখানে যেতে হবে। তবে শুধু শুষ্ক পাহাড়ে ঘুরে বেড়াতে কেন যেন অস্থির লাগে। তারচেয়ে ঝিরিপথ ধরে হাঁটাই আমার বেশি পছন্দ। সেইজন্য এই বিশাল পার্বত্য এলাকা জুড়ে থাকা সমস্ত ঝর্ণা আর খুমগুলো আমার পছন্দের লিস্টে একেবারে শুরুতে থাকে। বিলাইছড়ি, রাঙ্গামাটি জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। ধূপপানি ঝর্ণা, মুপ্পোছড়া ঝর্ণা, ন’কাটা ঝর্ণা ঘুরে এসেছি কিছুদিন আগে। রোমাঞ্চকর ট্রেকিং আর সেই সাথে পাহাড়ি ঝিরিপথ, এক কথায় অসাধারণ! সেই অভিজ্ঞতায় শেয়ার করবো আপনাদের সাথে।
ঝিরিপথের সাথে আমার প্রথম পরিচয়
ঝিরিপথের সাথে আমার প্রথম পরিচয় দেবতাখুম যাওয়ার পথে। দেবতাখুম বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়িতে অবস্থিত একটি খুম। দেবতাখুমের ঝিরিপথ, খুব সহজ একটা দেড় ঘন্টার পথ, তেমন কোনো চড়াই উতড়াই নেয়। উল্টো পথের দুইপাশে আছে সবুজে মোড়ানো টিলা। সাথে ঝিরি বেয়ে নেমে আসা পানি পুরো পথ জুড়ে বয়ে চলেছে, আর সেই পানির রাস্তা ধরে আমরা চলেছি উল্টো, ঝিরির উৎসের দিকে।
সুনসান নীরবতায় ঘেরা দেবতাখুম
বিলাইছড়ি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার আগে দেবতাখুম নিয়ে কিছু কথা বলে নেই। বান্দরবানের জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান এটি, খুমের গভীরতা এখানে ৫০ থেকে ৭০ ফিট। বাঁশের ভেলায় চেপে এই খুমের ভিতর যাওয়া যায়। বেলা তখন দশটা বেজে গেলেও সূর্যের মুখ দেখা যাচ্ছিল না দুইপাশের উঁচু পাহাড়ের জন্য। কিন্তু ঘাড় বাঁকিয়ে মাথা উঁচু করে পাহাড়ের একেবারে উপরের গাছগুলোয় তাকালেই সূর্যের অস্তিত্ব ঠিক টের পাওয়া যাচ্ছিলো। আমরা যেখান দিয়ে হাঁটছিলাম, সেখানে আলোও কিছু কম (মনে হচ্ছিল কেবল সূর্যোদয় হচ্ছে), আবার একটু পর পর পাহাড়ের গলি বেয়ে কোথা থেকে হালকা শীতল বাতাস এসে শরীরে একটু একটু ধাক্কা দিয়ে যাচ্ছিল।
ঝিরির দুই কিনারে আরো খানিকটা সমভুমি। যেখানে আপন মনেই গজিয়েছে নানা ঝোপঝাড়ের গুল্মগাছ সহ ছোট বড় আরো গাছপালা। কোথাও কোথাও সেগুলো নিজে থেকেই ঝিরি থেকে অনেকটা সরে গিয়ে আমাদের চলার জায়গা করে দিয়েছে আবার কোথাও কোথাও সেগুলোর সাথে আমাদের সংঘর্ষ হয়ে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও প্রকৃতি এক ছটাক জায়গা দেয়নি, ঝিরির পানিতে এক ফুট পা ডুবিয়ে চলতে হয়েছে, তো কোথাও আবার টিলাগুলো পথ আটকে দাড়িয়েছে। সেই টিলার গা বেয়ে ভ্রমণার্থীদের সুবিধার জন্য ছোট ছোট সিড়ির আকারের ধাপ করে দিয়েছে স্থানীয়রা।
পানির কুলকুল শব্দের সাথে মিল রেখে পাখিরাও যেন সময় মত নির্দিষ্ট তাল লয় মনে রেখে ডেকে উঠছিল একটু থেমে থেমেই। নাম না জানা পাখির কলরবে এমনই এক অপূর্ব সুর মূর্ছনার সৃষ্টি হয়েছিল পুরো পাহাড়ি পথটা জুড়ে যে আমি হাঁটছিলাম নাকি স্বর্গের মাঝে উড়ে বেড়াচ্ছিলাম বোঝা কঠিন! এরই মাঝে কোথাও কোথাও সূর্যের আলোর সাথে খেলা করে চলেছে নানা রঙের প্রজাপতি। বিশেষ করে হলুদ রঙের প্রজাপতির দল অনেক বেশি ছিল, মনে হচ্ছিল এই প্রজাপতিগুলোর থেকেই বুঝি সূর্য হলুদ আলো চুরি করে নিয়েছে!
বিলাইছড়ি ভ্রমণ
এবারে গিয়েছিলাম বিলাইছড়ি, উদ্দেশ্য ছিল মুপ্পোছড়া ঝর্ণা, ন’কাটা ঝর্ণা আর অসম্ভব সুন্দর ধূপপানি ঝর্ণা। বিলাইছড়ি যেতে হলে কাপ্তাই হয়ে যেতে হয়। আর ঝর্ণাগুলো কাপ্তাই লেক কেন্দ্র করেই। আমরা ঢাকা থেকে কাপ্তাই জেটি ঘাট (ফিসারি জেটি ঘাট) পর্যন্ত বাসের টিকিট করেছিলাম। জেটি ঘাটে নেমে খাবার হোটেল পাওয়া গেল। আগে থেকেই বোট ভাড়া করা ছিল আমাদের, খাওয়া দাওয়া শেষ করেই উঠে পরলাম নৌকায়। এবার দুই-আড়াই ঘন্টার বোট জার্নি করে পৌছালাম বিলাইছড়ি। কাপ্তাই লেকের সৌন্দর্যের কথা এখানে আলাদা করে আর না বলি, নিজে যেয়ে দেখবেন।
ট্রেকিং শুরু
প্রথমদিন যখন ট্রেকিং শুরু হল, একেবারে শুরুতেই কাদা মাটির রাস্তা পেলাম! দশ মিনিট হয়নি ট্রেকিং এর, পেয়ে গেলাম ঝিরি। মুপ্পোছড়া ঝর্ণা বেয়ে আসা পানি, সেই ঝর্ণাতেই চলেছি আমরা। ঝিরির পানিটা সেখানে একটু গভীর, মানে একটু বেশ গভীর শুধু আমার জন্য, আমার হাঁটু ডুবে যায়। ঝিরির দুই পাশে ফসলের জমি দেখে পানিটা ঘোলা হয়ে যাচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। কিন্তু বেশির ভাগ জায়গায় এই পানি কাঁচের মতো স্বচ্ছ দেখা যায়।
ফসলি জমি ছেড়ে আমরা ধীরে ধীরে বনের মধ্যে প্রবেশ করতে থাকলাম। কোথাও কোথাও বন এত ঘন হয়ে এসেছে যে পথ কোথায় বুঝা যায় না, আবার কোথাও রাস্তা এমনভাবে বাঁক নিয়েছে, মনে হচ্ছে সামনে আর যাওয়ার উপায় নেয়। একেবারে কাছে না গেলে বুঝা যায় না রাস্তা আছে নাকি! পাহাড় আর ঘন গাছপালার জন্য অনেক জায়গায়ই একেবারে অন্ধকার। অথচ তখন বেলা একটা বাজে। হঠাৎ হঠাৎ কোথাও সূর্যের আলো দেখা গেলে মন খুশি হয়ে যাচ্ছিল। একে তো পাহাড়ি রাস্তা, মানুষ বলতে আমরা ক’টি প্রানী, সূর্যের আলো পাহাড়ের উপরের গাছলাতেই সীমাবদ্ধ, সাথে অচেনা সব পাখির ডাক।
মুপ্পোছড়া আর ন’কাটা ঝর্ণার ঝিরিপথে
টিলা বেয়ে উঠার পথ, মানে চড়াই অনেক কিন্তু সেটা বিষয় ছিল না। আসল সমস্যা ছিল রাস্তা অনেক সরু। একটা পা পুরো রাখার মত জায়গা ছিল না কোথাও কোথাও। সাথে ছিল প্রচুর পিচ্ছিল কাদা মাটির সাথে কাঁকড় মেশানো। একবার পা ফসকে গেলে মুখ থুবড়ে পড়তে হবে। কিছু না হোক অন্তত উপরের আর নিচের পাটির সামনের চারটি দাঁত খুলে আসবে নিশ্চিত। আর কপালের মাঝে বরাবর একটা গোল আলু তো থাকবেই। কিন্তু এতটুকুই শেষ নয়, কোথাও কোথাও প্রচন্ড সরু রাস্তার এক পাশে পাহাড়ের দেয়াল আর এক পাশে খাঁদ পেয়েছি। কোনো কোনো জায়গায় এসব খাঁদ ১৫/২০ ফুটের কম নয়। মুপ্পোছড়া থেকে ফেরার পথেই পরে ন’কাটা ঝর্ণা। তখন বাজছিল বিকাল সাড়ে চারটা অথচ পাহাড়ে তখন সন্ধ্যা নেমে গেছে। একেবারেই আলো নেই আর।
ন’কাটা ঝর্ণা ঘুরে যখন ফিরার পথে পা ফেললাম তখন একেবারে ঝড়ের বেগে নামা শুরু করলাম সবাই। ঝিরির ঠান্ডা পানি পার হওয়ার সময়ও অতিরিক্ত এক সেকেন্ড সময় থামতে মন সায় দিচ্ছিল না কোথাও। আলোর অভাবে এমনিতেই মনে হচ্ছিল সন্ধ্যা হয়ে গেছে, ঘড়িতে চোখ বুলিয়ে দেখলাম আসলেই সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে। অনেকক্ষন পরে যখন আমাদের সামনে দেখা গেল আরেকটা গ্রুপ ফিরছে তখন একটু স্বস্তি লেগেছে মনে।
নৌকায় উঠে দেখা গেল একেবারে অন্ধকার আসন্ন। আমরা সবাই মিলে নৌকার ছাদে, কেউ বসে কেউ শুয়ে জায়গা করে নিলাম। দুইপাশে টিলা আর টিলা জুড়ে ঘন বন। সন্ধ্যা নে্মে আসায় কিংবা সমতল থেকে উঁচুতে হওয়ায় ঘন কুয়াশার চাদর সমস্ত টিলাগুলোকে ঢেকে ফেলেছিল। চারিদিক নিস্তব্ধ আর জনমানব শূন্য। অনেক দূরে দূরে কোনো কোনো টিলায় দু’একটি নিঃসঙ্গ মানুষ দেখে মন কেমন করে উঠছিল। সেই দু’একজন সবাই রাঙামাটির স্থানীয় অধিবাসী। তাদের বড্ড বেশি সঙ্গীহীন মনে হচ্ছিল সেই আধো আলো অন্ধকার পরিবেশে। এত নির্জনতা দেখে বারবার মনে হচ্ছিল আমি পৃথিবীর বাইরে অন্য কোনো গ্রহে চলে আসলাম নাকি! যখন আমাদের রাতের আশ্রয়ে পৌঁছালাম, তখন আকাশে তারা উঠে গেছে।
এবারের গন্তব্য ধূপপানি ঝর্ণার পাহাড়
শিরোনাম দেখেই বুঝছেন, ঝিরিপথের বদলে এবার পাহাড়ে চড়তে হয়েছে বেশি। সর্বোচ্চ আল্টিচ্যুড ছিল ৬০৬ ফুট। খুব বেশি নিশ্চয় নয়। তারপরও পাহাড়ের চড়া অত সোজা নয়। তবে হিমালয়ে চড়ার স্বপ্ন দেখি যখন, তখন এই কষ্টকে ‘কষ্ট’ বলতে চাই না আমি। আগের দিন সন্ধ্যায় ফিরে দুপুর আর রাতের খাবার একসাথে খেয়ে কারো শরীরে আর শক্তি অবশিষ্ট ছিল না। কিন্তু সবাই চায়ের পাগল বলে আবার বের হয়ে পরলাম চায়ের খোঁজে। আমাদের রীতিমত অবাক করে দিয়ে বিলাইছড়ি তে একটা দোকানে খুব ভালো চা বানিয়ে দিল।
পরদিন ছয়টা বাজতে না বাজতেই সবাই নৌকায়। কাপ্তাই লেক তখন ঘন কুয়াশায় ঢাকা, বেশিদূর দেখা যায় না। আগেই একটু একটু শীত করছিল, নৌকা ছাড়ার পর শিরেশিরে বাতাস চামড়ায় ফুটতে লাগল। দুইপাশের টিলাগুলোও ঘন কুয়াশায় ঢাকা। সূর্য উঠতেও অনেক দেরি! চারিদিকের ধূসর প্রকৃতি তখন কেমন যেন রহস্যের সৃষ্টি করে যাচ্ছিল চারপাশে। ঘন্টাখানিকের মাঝেই সূর্য রশ্মির দেখা পাওয়া গেল। সব নিস্তব্ধতা ভেঙে প্রাণের সঞ্চার শুরু হল। পাখ-পাখালি জেগে উঠলো, পানির উপরের পতঙ্গেরাও খেলা করা শুরু করলো। আরো কিছু পরে মনুষ্যবাহী নৌকাও যাওয়া শুরু করলো। বেলা বাড়ার সাথে সাথে পুরো লেকের জনজীবন জেগে উঠল পূর্ণরূপে।
পাহাড়ে ওঠা শুরু
যখন উলোছড়ি পৌঁছালাম, বেলা তখন সবে নয়টা। খানিকক্ষণ এদিক ওদিক করে আবার একটা ডিঙি নৌকায় চড়ে বসলাম। সরু লম্বা নৌকা, পাশাপাশি দুইজন বসা যায় না! তাই সবাই লম্বা করে বসে পড়লাম একে একে। এবার আধা ঘন্টার রাস্তা। মাঝে একটা নির্দিষ্ট জলাশয় জুড়ে শাপলার কলি ছড়িয়ে আছে। কয়েকটা সবে পূর্ণ শাপলায় পরিণত হয়েছে। ডিঙি থেকে নেমে ট্রেকিং শুরু। অল্প কিছু দূর গিয়েই গ্রাম (পাড়া) শেষ। এবারে শুরু থেকেই কাদার রাস্তা, একেবারে গোড়ালি ডুবানো কাদা। পা ভিজে থাকায় স্লিপ হচ্ছে প্রতি পদে। বিরামহীন সেই স্লিপের উৎপাত অসহ্য হয়ে গেল ধীরে ধীরে। আরো কিছুদূর গিয়ে শুরু হল চড়াই, পাহাড়ে রাস্তা করা আছে। কোথাও কোথাও বাঁশ দিয়ে কিংবা গাছের শিকড় দিয়ে রাস্তা বেঁধে দিয়েছে। উপরের দিকে উঠতেই যা কষ্ট! ধীরে ধীরে উপরের দিকে চলেছি, এই চলার রাস্তায় টুরিস্টরা আসে বলে স্থানীয়রা পেয়ারা, আমলকী যার যা গাছের ফল আছে; সেসব নিয়ে বসে পরেছে বিক্রির উদ্দেশ্যে। আমরাও কিনলাম সেসব থেকে কিছু কিছু।
কিন্তু পাহাড় আর শেষ হয় না! হাঁটু আর গোড়ালি বিদ্রোহ করছে ক্ষণে ক্ষণে। নিচে দিয়ে ঝিরির শব্দ পেলেও পথে ঝিরি দেখতে পাচ্ছিলা মনা একটাও। শুধু কয়েকবার একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে পথ থেকে নেমে যেয়ে কোন ঝিরি থেকে গাইড আমাদের পানির বোতল পূর্ণ করে আনছিল। পুরো রাস্তা জুড়ে এই ঝিরির পানির সাপ্ল্যাই না থাকলে বুক ফেটে মরে যেতাম নিশ্চিত!
ধূপপানি ঝর্ণার দেখা মিললো অবশেষে
আমরা চলেছি গন্তব্যের দিকে। শেষের দিকে যেয়ে স্বপ্নের মত একটা ঝিরিপথ পেয়েছিলাম। প্রথমে পাহাড় থেকে নেমে গেলাম বড় এক পাথরের উপর। তার চারপাশে আরো বড় বড় পাথর। বাঁদিক দিয়ে একটা ঝিরি এসে ডানে আমাদের রাস্তায় জুড়ে গেছে। সেই পথটুকু এতই অন্ধকার যে চলা অবস্থাতেও মশা কামড়ে যাচ্ছিল। একটু সূর্যের আলো নেই! কিছুদূর এগোলেই দু’পাশের গাছপালা নিচু হয়ে এসে পথ আটকে দিচ্ছে। একটা গাছ তো উপড়ে গিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে সামনে যাওয়া কিন্তু মানা। তো কেউ মানা করলেই শুনতে হবে নাকি?! সবাই চললাম সেই গাছের নিচে দিয়েই এক ফুট বরফ শীতল পানিতে পা ডুবিয়ে ডুবিয়ে।
মাত্র ১০ মিনিটের পথ হবে এই ঝিরিটুকু। কিন্তু এইটাই সবচেয়ে সুন্দর স্মৃতি, আরামের স্মৃতি! অবশেষে যখন ঝর্ণার দেখা পেলাম, মনে হলো জীবন সার্থক। স্থানীয়রা একে দুপপানি ঝর্ণা নামেও ডেকে থাকে। ধূপপানি ঝর্ণায় পৌঁছানোর পর, যেটুকু কষ্ট হয়েছিল পাহাড় চড়তে তাও মূহুর্তের মধ্যে উধাও হয়ে গেছিল। শান্তি, সৌন্দর্য আর পবিত্রতার এক যোগে প্রকাশ বুঝি একেই বলে। কী রূপ, কী অসীম শক্তির প্রদর্শনী, কী মহিমা!
এখনও চোখ বন্ধ করলেই মনে হয় আমি সেই আমাজনের মত অন্ধকার জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হেঁটে চলেছি, পায়ে আবার বরফ শীতল পানির ছোঁয়া পাই। দারুণ ছিল বিলাইছড়ি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, এক এথায় অসাধারণ! যেখানেই যান না কেন, ময়লা ফেলে পরিবেশ দূষণ করা থেকে বিরত থাকুন। বন্য পশু পাখির কোনো ক্ষতি করবেন না এবং স্থানীয়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন। ব্যস্ত জীবন থেকে ছুটি নিয়ে ঘুরে আসুন সৌন্দর্যমণ্ডিত জায়গা বিলাইছড়ি থেকে। আজকে তাহলে এই পর্যন্তই।