গায়ের রং উজ্জ্বল হোক, এই প্রত্যাশা প্রায় সবারই। অনেকে তো একধাপ এগিয়ে। অর্থাৎ বাজার থেকে বিভিন্ন ‘রং ফর্সাকারী’ ক্রিম কিনে এনে ব্যবহার করেন। তাতে সাময়িকভাবে ফর্সা হলেও ত্বকের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি হয়ে যায়। তাই এক্ষেত্রে ঘরোয়া উপায় বেছে নেওয়াই শ্রেয়। কারণ ত্বকের ধরন বুঝে ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করলে ত্বকের ক্ষতি হওয়ার ভয় থাকে না।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার উপায়(১) কলার ফেইস প্যাক
একটি পাত্রে পরিমান মতো কলা, ১ চা চামচ মধু আর ১ টেবিল চামচ টক দই মিশিয়ে নিয়মিত ত্বকে লাগান। এই প্যাকটি সান ট্যান দূর করে ত্বক ফর্সা করে তুলবে। সব ধরনের ত্বকের সাথে মানানসই এই ফেইস প্যাক।
(২) টক দই আর ওট মিলের স্কিন হোয়াইটেনিং মাস্ক
সারারাত ১ টেবিল চামচ ওট মিল ভিজিয়ে রেখে সকালে এটি পেস্ট করে এর সাথে ১ টেবিল চামচ টক দই মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করুন। এটি নিশ্চিতভাবে ত্বক ফর্সা করে। নিয়মিত ব্যবহারে অবশ্যই ভাল ফল পাবেন। ড্রাই টু নরমাল ত্বকের জন্য এই প্যাক বেশ উপকারী।
(৩) হলুদ আর টমেটোর ফেইস প্যাক
উজ্জ্বল ত্বক পেতে এক চিমটি হলুদ, ১ চা চামচ টমেটো বা লেবুর রসের সাথে মিশিয়ে মুখের ত্বকে লাগান নিয়মিত। অবশ্যই ত্বক ফর্সা হবে। আমরা কমবেশি সবাই জানি টমেটো ত্বকের কাল দাগ দূর করতে কতোটা কার্যকরী। টমেটোর ব্লিচিং উপাদান আর হলুদের ভেষজ উপাদান ত্বক ফর্সা করতে একসাথে কাজ করে। স্বাভাবিক থেকে তৈলাক্ত এবং শুষ্ক ত্বকে এই ফেইস প্যাকটি ব্যবহার করা যাবে।
(৪) আমন্ড ফেইস প্যাক
আপনি ৪-৫ টি আমন্ড সারারাত ভিজিয়ে রেখে এটি গুঁড়া করে পেস্ট তৈরি করে এর সাথে বাটার মিল্ক বা মালাই মিশিয়ে এই প্যাক ত্বকে লাগান। ১০-১২ মিনিট এই প্যাক ত্বকে রাখুন। এরপর কিছুক্ষণ স্ক্রাব করে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন প্যাকটি ত্বকে উজ্জ্বলতা এনে দিতে দারুণভাবে কাজ করেছে। এই প্যাক আপনার ত্বক নরম করবে, ত্বকের মৃত কোষ দূর করবে আর ত্বক হবে উজ্জ্বল। তবে আপনি যদি মালাই ব্যবহার করতে না চান তাহলে মধু বা টক দইও ব্যবহার করতে পারেন। শুষ্ক ত্বকের জন্য বেশ উপকারী এটি।
(৫) গুঁড়া দুধ ও লেবুর রসের হোয়াইটেনিং ফেইস প্যাক
একটি পাত্রে ১ চা চামচ গুঁড়া দুধ, ২ চা চামচ লেবুর রস আর ১/২ চা চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার পুরো মুখে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক পরিষ্কার হওয়ার সাথে সাথে আগের তুলনায় অনেকটা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। সব ধরনের ত্বকেই এই প্যাক ব্যবহার করা যাবে। লেবুতে থাকা প্রাকৃতিক ব্লিচিং উপাদান মধু আর দুধের সাথে মিশে ত্বক ফর্সা করে তুলতে সাহায্য করে। প্যাকটি তৈরি করে তেমন কোন বাড়তি ঝামেলাও নেই আর উপাদানগুলো প্রত্যেকের রান্নাঘরেই কমবেশি থাকে। আরেকটি কথা, নিয়মিত এই প্যাক লাগালে ত্বকে ব্রণের সমস্যাও দূর হবে।
(৬) বেসনের ফেইস প্যাক
বেসন সব সময় আমাদের ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করে ত্বককে তরুণ রাখতে সাহায্য করে। বেসনের সাথে বাটার মিল্ক মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগান আর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তৈলাক্ত ত্বকে এই ফেইস প্যাক ব্যবহার করা যাবে না।
(৭) পুদিনা পাতার ফেইস প্যাক
পুদিনা পাতায় বিদ্যমান অ্যাসট্রিজেন্ট ত্বকে পুষ্টি যোগানোর সাথে সাথে ত্বকে উজ্জ্বল করে তুলে। ১৫ থেকে ২০টি পুদিনা পাতা পেস্ট করে এটি মুখে লাগান এবং পুরো মুখে পেস্টটি লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে টান টান করবে আর ত্বকের ছোট ছোট পোর ঢেকে দেবে।পুদিনা পাতায় অ্যালার্জি থেকে থাকলে এই প্যাকটি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
(৮) আলুর খোসার স্কিন হোয়াইটেনিং ফেইস প্যাক
লেবুর রসের মত আলুর খোসায় ব্লিচিং উপাদান আছে । আলু খোসার পেস্ট নিয়মিত ত্বকে লাগান। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল আর ফ্রেশ হবে। সব ধরনের ত্বকেই এই প্যাক ব্যবহার করা যাবে।
(৯) চন্দনের ফেইস প্যাক
আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় তবে চন্দনের গুড়ার সাথে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। আপনার ত্বকে যতটুকু পরিমানে লাগে ততটুকু নিবেন। আপনার ত্বক প্রাকৃতিকভাবেই ফর্সা হবে এতে। এই প্যাক আপনার ত্বক শুধু উজ্জ্বলই করবে না আপনাকে দেখতেও অনেক ফ্রেশ লাগবে।
এই তো জেনে ফেললেন ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক ফর্সা করার ৯টি উপায়। এখন উপরে দেওয়া প্যাকগুলো থেকে যেটি আপনার ত্বকের জন্য উপকারী সেই প্যাকটি ব্যবহার করুন